বাড়িতে বসেই PVC ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করুন। জানুন পদ্ধতি।

আগামী ৮ই জুলাই, ২০২৩ তারিখে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন আয়োজিত হতে চলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক বিধানসভা নির্বাচন সমস্ত ক্ষেত্রেই ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার কার্ড এক অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি। এক কথায় বলা চলে ভারতীয় নাগরিকদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রই হলো ভোটার কার্ড। আর এবারে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক পূর্বে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে এক বিশেষ ধরনের ভোটার কার্ড কার্যকর করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে কার্যকরী এই ভোটার কার্ডটি সমগ্র ভারতের সাধারণ মানুষের কাছে পিভিসি ভোটার কার্ড নামে বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই পিভিসি ভোটার কার্ড নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠে এসেছে সাধারণ জনগণের মধ্যে থেকে। আর এক্ষেত্রে মূল যে প্রশ্নটি রয়েছে তা হল, কিভাবে পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানানো যাবে? আর এই প্রশ্নের উত্তরে নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, বর্তমানে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এমন এক বিশেষ প্রক্রিয়া কার্যকর করা হয়েছে যার মাধ্যমে আপনার বাড়িতে বসেই পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানানোর পাশাপাশি বাড়িতে বসেই পিভিসি ভোটার কার্ডটিও হাতে পেয়ে যাবেন। আর আজকের এই পোস্টে আমরা পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

চলুন তবে প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক পিভিসি ভোটার কার্ড কি?

ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে জারি করা তথ্য জানা গিয়েছে যে, যে সমস্ত ব্যক্তিরা তাদের ভোটার কার্ডের নানা রকম ভুল ত্রুটি সংশোধনের জন্য আবেদন জানিয়ে থাকেন তাদের নির্বাচন কমিশনের তরফে পিভিসি ভোটার কার্ড প্রদান করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে এই পিভিসি ভোটার কার্ডটি অনেকটা এটিএম কার্ড -এর মতো দেখতে হয়। এমনকি এটিকে পিভিসি আধার কার্ডের সঙ্গেও তুলনা করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে মূল যে প্রশ্নটি রয়েই যায় তা হল: ভোটার কার্ডে কোনোরকম সংশোধন না করলে কি পিভিসি ভোটার কার্ড পাওয়া যাবে না? আর এই প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, ভোটার কার্ডের সংশোধন না করলেও পিভিসি আধার কার্ড পাওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য আপনাকে একটি বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। ভোটার কার্ডের কোনোপ্রকার তথ্য সংশোধন না করে কিভাবে পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানানো সম্ভব তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো।

ভোটার কার্ডের কোনো তথ্য সংশোধন না করেও কিভাবে পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানানো সম্ভব?

১. পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে কার্যকরী VOTER HELPLINE অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করে নিতে হবে।

২. অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করার পর অ্যাপটি ওপেন করুন। অ্যাপটির হোম পেইজে গেলেই আপনার সামনে যে ড্যাশবোর্ড আসবে তাতে আপনি ভোটার কার্ড সংক্রান্ত নানাবিধ পরিষেবার বিভিন্ন প্রকার অপশন দেখতে পাবেন। এই সমস্ত অপশনগুলির মধ্যে থেকে আপনাকে VOTER REGISTRATION অপশনে ক্লিক করতে হবে।

৩. পরবর্তীতে আপনার সামনে যে নতুন অপশনগুলি আসবে তার মধ্যে থেকে আপনাকে CORRECTION OF ENTRIES (FORM 8) অপশনটি নির্বাচন করে নিতে হবে।

৪. উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলে আপনার সামনে যে নতুন পেজটি আসবে তাকে আপনাকে তার ফোন নম্বরের মাধ্যমে লগ ইনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করে নিতে হবে। লগইনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে আপনার সামনে আবারও একটি নতুন পেজ আসবে। এই পেজে থাকা Let’s Start অপশনে ক্লিক করুন।

আরও পড়ুন:- সুস্থ থাকতে চান? জানুন সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার উপকারিতা। রোগকে বলুন না!

৫. এরপর আপনার সামনে যে পেজটি আসবে তাতে Do You Already Have a Voter id number -এর আওতায় আপনি দুটি অপশন দেখতে পাবেন। আপনার যদি ভোটার কার্ড থেকে থাকে তবে আপনি Yes I Have Voter Id Number অপশনটি নির্বাচন করে নিন। অন্যদিকে, আপনার ভোটার কার্ড না থাকলে No I don’t have Voter id number অপশনটি নির্বাচন করে নিতে হবে। সবশেষে পেজটির নিচে থাকা NEXT অপশনে ক্লিক করুন।

৬. পরবর্তীতে আপনার সামনে যে পেজটি আসবে তাতে আপনাকে আপনার ভোটার আইডি নম্বর সঠিকভাবে লিখতে হবে এবং আপনার রাজ্যটি সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। সমস্ত প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হলে Fetch Details অপশনে ক্লিক করুন। এরপর proceed অপশনে ক্লিক করুন।

৭. উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলেই আপনার সামনে একটি নতুন পেজ আসবে, যাতে আপনি আপনার ভোটার কার্ডের সমস্ত তথ্য দেখে নিতে পারবেন। সমস্ত তথ্যগুলি দেখে নিয়ে পেজের নিচে থাকা Next অপশনে ক্লিক করুন।

৮. এরপর আপনাকে আপনার আধার নম্বর, মোবাইল নম্বর, ইমেইল এড্রেস (এক্ষেত্রে নিজের ইমেইল এড্রেস না থাকলে যেকোনো আত্মীয়ের ইমেইল এড্রেসও দেওয়া যেতে পারে) সঠিকভাবে পূরণ করে পেজের নিচে থাকা Next অপশনে ক্লিক করুন।

৯. তারপর আপনার সামনে যে নতুন পেজটি আসবে তাতে আপনি কেন পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানাচ্ছেন তা সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। আপনি যদি আপনার ভোটার কার্ডের যেকোনো তথ্য সংশোধন করতে চান তবে যে তথ্যটি সংশোধন করতে চাইছেন তা সঠিকভাবে নির্বাচন করে নিতে হবে। অন্যদিকে আপনি যদি ভোটার কার্ডের কোনোরূপ তথ্য সংশোধন না করেই ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানাতে চান তবে Issue of Replacement Epic without Correction অপশনটি নির্বাচন করে নিন। উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলেই আপনার সামনে যে নতুন পেজ আসবে তাতে আপনি কেন পিভিসি ভোটার কার্ডের রিপ্লেসমেন্ট চাইছেন তার কারণ নির্বাচন করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার পছন্দ অনুসারে কারণ নির্বাচন করে নিন এবং নিচে থাকা টার্মস এন্ড কন্ডিশনের চেক বক্সে ক্লিক করে নেক্সট অপশনে ক্লিক করুন।

১০. পরবর্তী পেইজে আপনি কোন স্থান থেকে আবেদন জানাচ্ছেন (আপনার গ্রাম অথবা শহরের নাম উল্লেখ করুন) তা সঠিকভাবে উল্লেখ করে DONE অপশনে ক্লিক করুন। উপরোক্ত অপশনে ক্লিক করলেই আপনার সামনে সম্পূর্ণ ফর্মটির একটি প্রিভিউ চলে আসবে। প্রিভিউতে সমস্ত তথ্য ঠিক থাকলে CONFIRM অপশনে ক্লিক করার মাধ্যমে ফর্মটি সাবমিট করুন। এরপর ভোটার হেলপ্লাইন অ্যাপের তরফে আপনাকে একটি রেফারেন্স আইডি দেওয়া হবে, এটি পরবর্তীতে প্রয়োজন হবে সুতরাং রেফারেন্স আইডিটি সামলে রাখুন।

আবেদন জানালে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আপনার বাড়িতে আপনার পিভিসি আধার কার্ডটি চলে আসবে। সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, ভোটার কার্ডের কোনপ্রকার তথ্য সংশোধন না করে উপরোক্ত প্রক্রিয়ায় পিভিসি ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন জানালে আপনি আগামী দিনে কখনোই নিজের পুরোনো ভোটার কার্ডটি ব্যবহার করতে পারবেন না, এক্ষেত্রে আপনাকে আপনার নতুন পিভিসি ভোটার কার্ডটিই সবক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে।

Leave a Comment