চা সুন্দরী প্রকল্পের অধীনে মিলবে বিনামূল্যে জমি এবং বাড়ির সুবিধা। বিস্তারিত জেনে নিন।

সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নানাভাবে সুবিধা প্রদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। আর মুখ্যমন্ত্রীর তরফে কার্যকর এই সমস্ত প্রকল্পগুলির মধ্যে রাজ্যের চা শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে কার্যকরী চা সুন্দরী প্রকল্প একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রকল্প। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের ৩৭০ টি চা বাগানের সমস্ত শ্রমিক এই প্রকল্পের অধীনে সুবিধা পাবেন বলেই জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার প্রকাশিত তথ্য অনুসারে। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্যে আরো জানানো হয়েছে যে, এই প্রকল্পের অধীনে উত্তরবঙ্গে বসবাসকারী ৩ লক্ষ ৮০ হাজার চা শ্রমিকের পরিবার সুবিধা পাবেন। ইতিমধ্যেই চা সুন্দরী প্রকল্প নিয়ে রাজ্যের চা শ্রমিক সহ অন্যান্য সাধারণ জনগণের মধ্যে চর্চার সূত্রপাত ঘটেছে, আর তাই আজকের এই পোস্টে আমরা চা সুন্দরী প্রকল্প নিয়ে সমস্ত রকম তথ্য তুলে ধরতে চলেছে।

চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় কি কি সুবিধা পাওয়া যাবে?

১. চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতাধীন শ্রমিকরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জমির অধিকার পাবেন, এমনটাই জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্যে।
২. চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় চা বাগানের শ্রমিকদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফে।
৩. শ্রমিকদের যাতে কোনরকম অসুবিধা না হয় তাই চা বাগানের নিকটবর্তী সরকারি জমিতে তাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ। এক্ষেত্রে প্রতিটি বাড়িতে দুটি করে ঘর, একটি রান্নাঘর এবং একটি শৌচালয় রয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে।
৪. সম্পূর্ণ বিনামূল্যে জমি বাড়ি পাওয়ার পাশাপাশি চা বাগানের শ্রমিকরা যাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চাল, গম সহ অন্যান্য রেশনের সামগ্রী পেতে পারে তাও নিশ্চিত করা হবে চা সুন্দরী প্রকল্পের মাধ্যমে।

কারা চা সুন্দরী প্রকল্পের অধীনে উপরোক্ত সুবিধাগুলি পাবেন?

১. মূলত চা বাগানের শ্রমিকদের চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে জমি বাড়ি এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে যে সমস্ত চা শ্রমিকদের নিজস্ব বাড়ি নেই অর্থাৎ গৃহহীন চা শ্রমিকদের এই প্রকল্পের অধীনে বাড়ি প্রদান করা হবে।
২. পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ীভাবে বসবাসকারী চা শ্রমিকরাই কেবলমাত্র চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় সমস্ত প্রকার সুবিধা পাবেন।

আরও পড়ুন:- কোনোরকম রূপচর্চা ছাড়াই সুন্দর, স্বাস্থ্যকর ত্বক পাওয়ার রহস্য জেনে নিন।

এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনের প্রক্রিয়া:-

চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় কারা অনুদান পাবে তা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে রাজ্যের শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তাদের তরফে। এক্ষেত্রে উত্তরবঙ্গের চা বাগান গুলিতে যে সমস্ত শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন তাদের নামের তালিকা ধরেই নির্ধারণ করা হয় কারা এই প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে জমি, বাড়ি সহ অন্যান্য সুবিধাগুলি পাবেন। তবে এই চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে চা বাগানের শ্রমিকদের বেশ কিছু প্রমাণপত্র জমা দিতে হয়। এক্ষেত্রে যে যে প্রমাণপত্র গুলির প্রয়োজন হয়ে থাকে তা হল:-

১. উক্ত চা শ্রমিকের পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার প্রমাণপত্র।
২. নিজের ফটো আইডেন্টিটি প্রুফ।
৩. চা বাগানের শ্রমিক হওয়ার প্রমাণপত্র।

পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের শৈল শহরগুলি চা এবং এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ তথা বিশ্বের মানুষের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে এই সমস্ত চা বাগানগুলিতে যে সমস্ত শ্রমিকরা কাজ করে থাকেন তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা অবশ্য প্রয়োজনীয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই সমস্ত চা শ্রমিকরা চা বাগানের আশেপাশের ঘিঞ্জি বস্তিতে বসবাস করে, এমনকি বহু ক্ষেত্রেই অরক্ষিত এলাকায় বসবাস করার জন্য চা শ্রমিকদের বস্তিতে লেপার্ড কিংবা চিতা বাঘের হামলা হয়ে থাকে। আর এই সমস্ত সমস্যা থেকে চা শ্রমিকদের মুক্ত করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে চা সুন্দরী প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। তবে শুধু তাই নয়, এছাড়াও চা শ্রমিকদের শিক্ষিত করে তোলার জন্য এবং রাজ্যের অন্যান্য নাগরিকদের মতই বিভিন্ন ক্ষেত্রের সুবিধা প্রদানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের নিত্যনতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে চা শ্রমিক সহ তাদের সন্তানরা এক সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ পাবে এবং আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য নাগরিকদের মত সমস্ত ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

Leave a Comment