পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্যের দরিদ্র অসহায় আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর সাধারণ জনগণের জন্য বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী এই সমস্ত প্রকল্পগুলির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী কৃষক, সদ্যোজাত শিশু, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মহীন যুবক-যুবতী, বিধবা মহিলা, শ্রমিক থেকে শুরু করে বয়স্ক বৃদ্ধ ব্যক্তি এমনকি শিল্পীরাও নানা ধরনের সুবিধা পেয়ে থাকেন। আর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কার্যকরী তেমনই এক বিশেষ প্রকল্প হল বার্ধক্য ভাতা। মূলত পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর অসহায়, বয়স্ক নাগরিকদের সাহায্য করার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে বার্ধক্য ভাতা কার্যকর করা হয়েছে, এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত নানাবিধ তথ্য অনুসারে।
বার্ধক্য ভাতা কি?
পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী যে সমস্ত ব্যক্তির বয়স বর্তমানে ৬০ কিংবা তার থেকে বেশি এবং যারা নিজস্ব শারীরিক অক্ষমতার কারণে অর্থ উপার্জন করার ক্ষমতায় নেই সেই সমস্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্যই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে বার্ধক্য ভাতা নামক এই বিশেষ প্রকল্পের অবতারণা করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকরী বার্ধক্য ভাতার মাধ্যমে রাজ্যে বসবাসকারী ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরা প্রতিমাসে ১০০০ টাকার অনুদান পেয়ে থাকেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কার্যকরী অন্যান্য প্রকল্পের মতই এই প্রকল্পের টাকাও প্রকল্পের সুবিধাভোগী ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে।
এই প্রকল্পের আওতায় আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যক যোগ্যতা কি কি?
১. কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী নাগরিকরা এই প্রকল্পের অধীনে আবেদন জানাতে পারবেন।
২. বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ৬০ বছর কিংবা তার তুলনায় বেশি হওয়া আবশ্যক। যদিও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বসবাসকারী শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা ৬০ বছর বয়সের পূর্বে এই প্রকল্পের আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন। মূলত ৫৫ বছর বয়স হলেই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা বার্ধক্য ভাতার আওতায় নিজেদের নাম নথিভুক্তকরণের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
৩. রাজ্যে বসবাসকারী পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই বার্ধক্য ভাতা অধীনে নিজেদের নাম নথিভুক্তকরণের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
আরও পড়ুন:- পোস্ট অফিসের বিশেষ বিশেষ সঞ্চয় প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জেনে নিন।
বার্ধক্য ভাতার অধীনে নিজের নাম নথিভুক্ত করবেন কিভাবে?
বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই নিজস্ব এলাকার বিডিও অফিসে পৌঁছে যেতে হবে। এরপর বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যক ফর্মটি সংগ্রহ করে তা সঠিকভাবে পূরণ করে নিতে হবে। সবশেষে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথিগুলি ফর্মের সঙ্গে যুক্ত করে বিডিও অফিসে পুনরায় ফর্মটি জমা দিলেই বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।
এছাড়াও দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পের মাধ্যমেও আপনারা বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদন জানাতে পারবেন। এক্ষেত্রেও একইভাবে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প থেকে বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ফর্মটি সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেটিকে পূরণ করে সমস্ত নথি সহকারে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে জমা দিলেই বার্ধক্য ভাতার অধীনে আবেদনের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী সেপ্টেম্বর মাসেই সমগ্র রাজ্যজুড়ে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প আয়োজিত হতে চলেছে, এমনটাই জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে।
আবেদনের ক্ষেত্রে আবশ্যক নথিসমূহ:-
১. আবেদনকারীর আধার কার্ড
২. ডিজিটাল রেশন কার্ড
৩. প্যান কার্ড (আবেদনের ক্ষেত্রে প্যান কার্ড বাধ্যতামূলক নয়, প্যান কার্ড না থাকলেও আবেদন জানানো সম্ভব।)
৪. ভোটার কার্ড
৫. আবেদনকারীর সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি (২ কপি)
৬. ব্যাংকের পাস বইয়ের প্রথম পাতার জেরক্স কপি