প্রত্যেক মানুষই জীবনে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি, আর তাই ছোটবেলা থেকেই আমাদের ‘জীবনে কি হতে চাই’ এই প্রশ্নটি করা হয়ে থাকে। আর এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমরা প্রত্যেকে ছোট থেকে যেকোনো একটি পেশায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য স্বপ্ন সাজিয়ে থাকি। অনেকেই ডাক্তার হতে চান, অনেকে ইঞ্জিনিয়ার, অনেকে আবার শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, কেউ আবার অভিনেতা হতে চায়, আবার কেউ কেউ দেশরক্ষার জন্য পুলিশ হতে চান। আর যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের জীবনে পুলিশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় আজকের এই পোস্টটি তাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।
পুলিশ হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়:-
পুলিশে যোগদানের ক্ষেত্রে আপনাকে রাজ্য সরকারের তরফে আয়োজিত বিশেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। তবে এক্ষেত্রে শুধুমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ হলেই পুলিশ হওয়ার ক্ষেত্রে যে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার প্রয়োজন হয় আপনি তাতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে পুলিশের বিভিন্ন পোষ্টের জন্য নানা ধরনের যোগ্যতা প্রয়োজন হয়ে থাকে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে কনস্টেবল পদের জন্য আবেদন করা সম্ভব। অন্যদিকে এসআই, ডিএসপি, এসপি পদে আবেদনের ক্ষেত্রে গ্রাজুয়েশন বা স্নাতক স্তরে উত্তীর্ণ হওয়া আবশ্যক।
তবে এক্ষেত্রে মূল যে প্রশ্নটি রয়ে যায় তা হল পুলিশ হওয়ার জন্য কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। আর এই প্রশ্নের উত্তরে সমগ্র রাজ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি, মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়ে আর্টস বা সায়েন্স অথবা কমার্স যেকোনো বিষয় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই আপনি কনস্টেবল রূপে চাকরি করার ক্ষেত্রে রাজ্যস্তরে যে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়ে থাকে তাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অন্যদিকে এসআই, ডিএসপি কিংবা এসপি হওয়ার পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে আপনি আর্টস, সাইন্স অথবা কমার্সে যেকোনো বিষয় নিয়ে গ্রাজুয়েশন কিংবা স্নাতক স্তরের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এছাড়াও আপনি যদি BBA, BCA, B TECH -এর মত যেকোনো ডিগ্রি কোর্সের অধীনে পড়াশোনা করে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করলেও আপনি পুলিশ হওয়ার ক্ষেত্রে গৃহীত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- আবেদন করুন সীতারাম জিন্দাল স্কলারশিপে এবং পেয়ে যান সর্বোচ্চ ৩৮,৪০০ টাকার অনুদান।
সুতরাং যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যতে পুলিশ হতে চান তাদের বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকারের তরফে স্বীকৃত যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সাইন্স, কমার্স কিংবা আর্টসের যে কোন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করলেই আপনি পুলিশের জন্য গৃহীত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। আর এক্ষেত্রে সবথেকে সুবিধাজনক বিষয়টি হল পুলিশের চাকরির জন্য যে পরীক্ষাগুলি নেওয়া হয়ে থাকে তাতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ নম্বর শতাংশের প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ আপনি উচ্চমাধ্যমিকে অথবা স্নাতক স্তরে উত্তীর্ণ হলেই এই সমস্ত পরীক্ষাগুলিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন, এক্ষেত্রে আবেদনের জন্য আলাদা করে কোন বিশেষ নম্বরের প্রয়োজন হয় না।
এর পাশাপাশি ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আরও জানিয়ে রাখি যে, শুধুমাত্র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই হবে না, এক্ষেত্রে আপনাকে মেডিকেল টেস্ট এবং ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। এমনকি কিছু কিছু পদের ক্ষেত্রে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ইন্টারভিউও দিতে হয়, ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হলে তবেই চাকরিপ্রার্থীরা পুলিশ হিসেবে চাকরি করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে আরো জানিয়ে রাখি যে, পুলিশ হবার ক্ষেত্রে যে সমস্ত পরীক্ষাগুলি গ্রহণ করা হয়ে থাকে তাতে ইংরেজি, গণিত, ইতিহাস, ভূগোল সহ সাধারণ জ্ঞান এবং বিজ্ঞান সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।
অর্থাৎ আপনি যে স্ট্রিম থেকেই পড়াশোনা করুন না কেন পুলিশ হওয়ার ক্ষেত্রে গৃহীত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য আপনাকে উপরোক্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে হবে। যদিও এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি পরীক্ষার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে একটি বিশেষ সিলেবাস নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। সুতরাং আপনিও যদি ভবিষ্যতে রাজ্য পুলিশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান তবে রাজ্য সরকারের তরফে নির্ধারিত সিলেবাস অনুসারে পড়াশোনা করুন এবং মেডিকেল টেস্ট, ফিটনেস টেস্ট ও ইন্টারভিউয়ের জন্য নিজের প্রস্তুত করুন।