রাজ্যে পুজোর ছুটি কতদিন? কবে থেকে শুরু হচ্ছে ছুটি? বিস্তারিত জেনে নিন।

বাঙালি আর ছুটির অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। প্রতি মাসের শুরুতেই কোন দিন, কি কি কারণে ছুটি থাকতে চলেছে তা আগে থেকে জানতে বাঙালির উৎসাহর শেষ নেই। আর বর্তমানে বাংলায় বর্ষা ঢুকতে না ঢুকতেই বাঙালি রথযাত্রার আবহে মেতেছে। যেহেতু রথযাত্রার সময়ই পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ পূজা মন্ডপগুলিতে দুর্গাপূজার খুঁটি পূজা সম্পন্ন হয়ে থাকে তাই দুর্গাপূজার অপেক্ষায় দিনগোনাও রথযাত্রা থেকেই শুরু হয়ে যায়। যার কারণে অন্যান্য বছরের মত এবছরেও রথযাত্রা শুরু হওয়ার আগে থেকেই দুর্গাপূজার কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আর তাই পূজার ছুটি কবে থেকে শুরু হতে চলেছে এবং কতদিন পূজার ছুটি পাওয়া যাবে তা নিয়ে বারংবার নানা ধরনের চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের সাধারণ জনগণের মধ্যে। যার জেরে আজকের এই পোস্টে আমরা পুজোর ছুটি সংক্রান্ত সমস্ত প্রকার তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি।

কবে থেকে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে পূজার ছুটি শুরু হতে চলেছে:-

সাধারণত প্রত্যেক বছরের শুরুতেই রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন আঞ্চলিক উৎসব, অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে কোন কোন দিন ছুটি থাকতে চলেছে তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়ে থাকে। একইভাবে চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২৩ -এর শুরুতেই রাজ্য সরকারের তরফে সমগ্র বছরের ছুটির তালিকা প্রকাশ্যে আনা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রী এবং সাধারণ জনগণের সুবিধার্থে এই বিশেষ তালিকা তৈরি করা হয়ে থাকে।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে প্রকাশিত তালিকা অনুসারে, ২০২৩ সালে রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা সমস্ত ছুটি মিলিয়ে মোট ৬৫ দিনের ছুটি পেতে চলেছেন। এই ৬৫ দিনের মধ্যে পূজার কারণে লম্বা ছুটি পেতে চলেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী সহ ছাত্র-ছাত্রীরা। অর্থাৎ পুজোর কারণে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির ছাত্র-ছাত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে কর্মরত কর্মীরা চলতি বছরে প্রায় ১ মাসের ছুটি পেতে চলেছেন। তবে রবিবার বাদে এই ২৬ দিনের ছুটি বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুসারে, রাজ্যের সরকারি কর্মী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা ১৪ ই অক্টোবর ২০২৩ তারিখ থেকে শুরু করে ২৮ শে অক্টোবর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত দুর্গাপূজার এবং লক্ষ্মী পূজার কারণে ছুটি পেতে চলেছেন।

১৪ ই অক্টোবর মহালয়ার কারণে ছুটি পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মী এবং বিভিন্ন সরকারি স্কুল ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। অর্থাৎ মহালয়ার মধ্য দিয়ে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পুজোর ছুটি শুরু হয়ে যাচ্ছে। এরপর ১২ ই নভেম্বর থেকে শুরু করে ১৬ ই নভেম্বর পর্যন্ত কালীপূজা দীপাবলি এবং ভাইফোঁটার কারণে সমগ্র রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছুটি থাকতে চলেছে। অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত ছুটির তালিকা অনুসারে, পুজোর ঠিক পরেই আবারও ২ দিনের ছুটি পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মী এবং ছাত্র-ছাত্রীরা। ১৯ শে নভেম্বর এবং ২০ শে নভেম্বর ছট পুজোর কারণে ছুটি পেতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রী সহ রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত কর্মীরা। যেহেতু ১৯ তারিখ দিনটি রবিবার রয়েছে তাই ২০:১১:২০২৩ তারিখে ছট পূজার কারণে অতিরিক্ত ছুটি দেওয়া হবে। ১৯ নভেম্বর দিনটি রবিবার হলে ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৭ ই নভেম্বর এবং ১৮ ই নভেম্বর শুক্রবার ও শনিবার পড়েছে। অর্থাৎ সরকারি কর্মীরা ১৭ নভেম্বর দিনটির ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই পুজোর ছুটির পরও অতিরিক্ত ৪ দিনের ছুটি পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ একদিনের ছুটি ম্যানেজ করতে পারলেই ১২ ই নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০ শে নভেম্বর পর্যন্ত টানা ছুটি পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:- আবেদন করুন প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় এবং পেয়ে যান এককালীন ৫,০০,০০০ টাকার অনুদান

ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে পুজোর ছুটি সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশে আনায় যথেষ্ট খুশি হয়েছেন সমগ্র রাজ্যের সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল গুলির ছাত্র-ছাত্রী সহ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত কর্মীরা। অনেক আগে থেকেই পূজোর ছুটি সম্পর্কিত ঘোষণার কারণে পুজোতে পাহাড় ঘোরার লম্বা ট্রিপ থেকে শুরু করে বিদেশ ভ্রমণের প্ল্যানিং অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। অন্যদিকে অনেক আগে থেকেই ছুটি সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য জানার কারণে টিকিট বুকিংয়েও কোনোরকম সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আর তাতেই ইতিমধ্যেই পূজোর ছুটির আবহে মজেছে বাঙালি। পুজোর কাউন্টডাউন থেকে শুরু করে পূজোর লম্বা ছুটির জন্য কেনাকাটা পর্যন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। পূজা মানেই বাঙালির কাছে এক অন্য রকমের আবেগ। আর দুর্গাপূজা, লক্ষ্মী পূজা, কালী পূজা সহ দীপাবলির কারণে প্রায় ১ মাসের ছুটি পাওয়া গেলে পূজোর ছুটির আনন্দে এখনই খুশির জোয়ারে গা ভাসিয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যবাসী।

তবে রাজ্যের সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখি যে, এই ছুটির তালিকা অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত সরকারি এবং সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত বিদ্যালয়গুলি থেকে শুরু করে নানাবিধ রাজ্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ছুটি দেওয়া হবে। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, শুধুমাত্র কলকাতার কালেক্টারের দপ্তরে এবং রেজিস্টার -এর দপ্তরে এই তালিকা মেনে ছুটি দেওয়া হবে না।

Leave a Comment